আপনি কি জানেন কিওয়ার্ড কি? কিওয়ার্ড হচ্ছে একটি শব্দ কিংবা দুই বা ততোধিক শব্দের সমষ্টি। সহজ ভাবে বোঝাতে গেলে, আপনি কিংবা আমি গুগলে যা লিখে সার্চ করি কাংখিত তথ্য খুঁজে বের করার জন্য তাই হলো কিওয়ার্ড। এটি অন পেজ এস.ই.ও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এই কিওয়ার্ড অনুযায়ী গুগল আপনার আর্টিকেল কে র্যাংক করাতে সহায়তা করে। গুগলে ঠিক মতো র্যাংক করাতে পারলে আপনি প্রচুর ট্রাফিক জেনারেট করতে পারবেন আপনার আর্টিকেলে।
কিওয়ার্ড রিসার্চ
গুগলের প্রতিনিয়ত আপডেটের ফলে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করতে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে SEO এর ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত যে নিয়ম টি একই আছে তা হলো ” কিওয়ার্ড রিসার্চ “। একটা SEO ফ্রেন্ডলি স্ট্যান্ডার্ড আর্টিকেল লেখার পূর্বশর্ত হলো ভাবে করে কিওয়ার্ড কে রিসার্চ করা। কেননা এটি রিসার্চ এর মাধ্যমে একটি আর্টিকেল কে গুগলে র্যাংক করানো সম্ভব। একটি আর্টিকেল লেখার পূর্বে তাই কিওয়ার্ড রিসার্চ অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
এটি রিসার্চ করার সময় আপনাকে দেখতে হবে কোন ধরনের কিওয়ার্ডগুলো মানুষ গুগলসহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে বেশি সার্চ করে থাকে। যে কিওয়ার্ডগুলো মানুষ বেশি সার্চ করে সেই কিওয়ার্ড দিয়ে টাইটেল বানালে সেগুলো সার্চ ইঞ্জিনগুলো তে সহজে র্যাংক করে। আজকের এই আর্টিকেলে ওয়েবসাইট এস.ই.ও এর ক্ষেত্রে কিওয়ার্ড রিসার্চ কি? এর গুরুত্ব এবং কিভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করলে আপনার আর্টিকেল গুগলে র্যাংক করবে তা আলোচনা করা হবে।
কিওয়ার্ড কয় প্রকার তা আসলে নির্দিষ্ট করে বলা টা বোকামি। কিওয়ার্ড যেভাবে ব্যবহার করা হয় সেখান থেকে ধারণা করা যায় এটি সাধারণত ২-৩ ধরনের হয়ে থাকে। শর্ট টেইল, মিড টেইল এবং লং টেইল কিওয়ার্ড সাধারণত ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
শর্ট টেইল কিওয়ার্ডঃ
বুঝতেই পারছেন এ ধরনের কিওয়ার্ড এর আকৃতি ছোট হয়ে থাকে। সাধারণত ২-৩ টি শব্দ নিয়ে এটি গঠন করা হয়। যেমনঃ “কন্টেন্ট লিখে ইনকাম”। এই ভাবে কিওয়ার্ড লিখলে আপনি গুগলে আপনার আর্টিকেল টি কে সহজে র্যাংক করাতে পারবেন না। কারণ এরকম কিওয়ার্ড আপনার পূর্বে অনেকেই ব্যবহার করেছে। তাই এক্ষেত্রে কম্পিটিশন টা অনেক বেশি। তাই আপনি যদি নিউ ব্লগার হয়ে থাকেন আপনার উচিৎ হবে শর্ট টেইল কিওয়ার্ড পরিহার করা।
লং টেইল কিওয়ার্ডঃ
লং টেইল সাধারণত তিন শব্দের বেশি শব্দ দ্বারা লেখা হয়ে থাকে। যেমনঃ “মোবাইল দিয়ে কন্টেন্ট লিখে টাকা ইনকাম করুন সহজেই”। এটি একটি লং টেইল কিওয়ার্ড এর উদাহরণ। এরকম কিওয়ার্ড ব্যবহার করলে এটি সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক পাওয়ার পসিবিলিটি অনেক। কারণ এগুলো অনেক ইউনিক হয়ে থাকে। আপনি নতুন ব্লগার হয়ে থাকলে প্রথমে আপনার লং টেইল কিওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত। কারণ এই কিওয়ার্ড এর সার্চ ভলিউম কম থাকে এবং গুগলে র্যাংক করানোর ক্ষেত্রে আপনাকে কম্পিটিশন ও কম করতে হবে।
কিওয়ার্ড রিসার্চ কেন গুরুত্বপূর্ণঃ
এটি রিসার্চ করার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন মানুষ কি ধরনের ওয়ার্ড লিখে প্রতিনিয়ত সার্চ করছে এবং কারা, কোথা থেকে সার্চ করছে। আপনি এই সব তথ্য ব্যবহার করে আপনার ব্রেইন খাটিয়ে উপযুক্ত কিওয়ার্ড টি বাছাই করুন যার মাধ্যমে আপনি আপনার আর্টিকেল টি কে সহজেই গুগলে র্যাংক করাতে পারবেন।
ধরুন আপনি একটি আর্টিকেল লিখলেন। আর্টিকেলটির কিওয়ার্ড হলোঃ বেস্ট মোবাইল ফোন ২০২২। অর্থাৎ ২০২২ সালে যে ফোন সবচেয়ে ভালো সে সম্পর্কে আপনি একটি সুন্দর আর্টিকেল লিখলেন। আর্টিকেলে মোবাইলের দাম, ফিচার্স, ভালো দিক, মন্দ দিক, সব তুলে ধরলেন। এখন গুগলে যদি কোন ভিজিটর বেস্ট মোবাইল ফোন সম্পর্কে জানতে চায় তাহলে গুগলের তথ্য ভান্ডারে যে সমস্ত আর্টিকেল রয়েছে তার ভেতর থেকে সবচেয়ে ইউনিক, সুন্দর আর্টিকেল টি গুগল প্রথমে শো করবে। সে যদি আপনার কিওয়ার্ড টি লিখে সার্চ করে তাহলে গুগলের ফার্স্ট পেইজ এ আপনার আর্টিকেল টি চলে আসবে। এই জন্য কিওয়ার্ড রিসার্চ করে দেখতে হয় মানুষ কি ধরনের কিওয়ার্ড লিখে গুগলে সার্চ করে।
- সব সময় লং টেইল কিওয়ার্ড ব্যবহার করবেন। কারণ লং টেইল কিওয়ার্ড এর সার্চ ভলিউম কম থাকে এবং আপনার কম্পিটিটর ও কম। তাই টার্গেটেড গ্রাহকদের কাছে আপনার আর্টিকেল টি পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। এর ফলে আর্টিকেল টি গুগলেও ভালো র্যাংক করে। তাই আপনি নিউ ব্লগার হয়ে থাকলে নিজের ব্লগ সাইট কে যদি গুগলে র্যাংক করাতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনার উচিত হবে লং টেইল কিওয়ার্ড ব্যবহার করা।
- কিওয়ার্ড রিসার্চ এর ক্ষেত্রে আপনি কিছু টুলস এর সাহায্য নিতে পারেন। যা আপনাকে কাঙ্ক্ষিত কিওয়ার্ড খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। গুগল কিওয়ার্ড প্ল্যানার এবং উইবার সাজেস্ট এক্ষেত্রে বেস্ট হবে। এই টুলস এর জন্য আপনাকে টাকা খরচ করতে হবে না। কারণ এগুলো একদম ফ্রি সার্ভিস দেয়।
- যখন দেখবেন আপনার কোন আর্টিকেল গুগলে ভালো মতো র্যাংক করেছে তখন আপনার অন্য আর্টিকেল এর লিংক এড করে দিন। ইনটার্নাল লিংক এড করে দেওয়ার ফলে আপনার র্যাংক করা আর্টিকেল থেকে প্রচুর ভিজিটর পাবেন।
- আপনার ওয়েবসাইট এর আর্টিকেল যদি আপনি নিজে লিখে থাকেন তাহলে সব সময় চেষ্টা করুন মুল টপিক টা কে কেন্দ্র করে আর্টিকেল লেখার। এতে আপনার আর্টিকেলে ঢোকার পর একজন ভিজিটরের মনোযোগ বাড়ানো যায়।
- আপনাকে আপনার কম্পিটিটরের ডিফিকাল্টি, সার্চ ভলিউম সম্পর্কে নজর রাখতে হবে। এতে করে তাকে পেছনে ফেলে আপনার আর্টিকেল কে গুগলে র্যাংক করাতে পারবেন।
- অনপেজ ও অফপেজ এসইও এর ভেতর পার্থক্য কি
- এফিলিয়েট মার্কেটিং
- এফিলিয়েট কি
- এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার উপায়
- বিভিন্ন এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট
- ফ্রিল্যান্সিং কি? নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার কিছু টিপস!
- ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা ও ভবিষ্যৎ!
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? কেন করবো? কিভাবে করবো?
কিওয়ার্ড রিসার্চ কিভাবে করতে হয়
এমন অনেকেই আছে যারা বুঝে উঠতে পারেন না কিভাবে একটি কিওয়ার্ড রিসার্চ শুরু করবেন৷ তাদের জন্য ছোট পরিসরে আলোচনা করা হলো-
টপিক সিলেক্ট করুনঃ
আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য কি ধরনের আর্টিকেল উপযুক্ত বলে আপনার মনে হয় তার একটি লিস্ট তৈরি করুন। প্রথমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৫-১০ টি টপিক বাছাই করুন। এখন আপনাকে দেখতে হবে এই টপিক রিলেটেড আর কোন কোন কিওয়ার্ড দিয়ে মানুষ গুগলে সার্চ করছে। এটা দেখার জন্য আপনি গুগলের ফ্রি কিওয়ার্ড টুলস ব্যবহার করুন।
সাব-টপিক সিলেক্ট করুনঃ
টপিক নির্ধারণের পর আপনাকে সাব টপিক নির্ধারণ করতে হবে। এ জন্য দরকার গুগলের অন্যান্য আর্টিকেলগুলো ভালো ভাবে পড়া। সেম টপিকে আপনার কম্পিটিটররা কি ধরনের সাব টপিক এড করেছে সেগুলো পড়ে দেখুন। এবং বিভিন্ন যায়গা থেকে রিসার্চ করুন। রিসার্চ করার পর কিছু ইউনিক সাব টপিক নির্ধারণ করুন যাতে আপনার কম্পিটিটরদের থেকে আপনার আর্টিকেল টি ইউনিক হয়। মনে রাখবেন, গুগল ডুপ্লিকেট কনটেন্ট চিহ্নিত করতে পারে। তাই কারও আর্টিকেল এর সাব টপিক সরাসরি কপি করা থেকে বিরত থাকুন।
রিলেটেড কিওয়ার্ড খুঁজে বের করুনঃ
আপনার ফোকাস কিওয়ার্ড এর সাথে সম্পৃক্ততা আছে এরকম রিলেটেড কিওয়ার্ড খুঁজে বের করুন। কেও যদি রিলেটেড কিওয়ার্ড লিখেও সার্চ দেয় তাহলে এটি আপনার আর্টিকেল কে শো করবে। এই জন্য রিলেটেড কিওয়ার্ড এর গুরুত্ব অনেক। আর অতিরিক্ত ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার করলেও গুগল সেটা কে স্প্যাম ভাবে। তাই ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার না করে আমরা এর পাশাপাশি রিলেটেড কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারি।
মেইন কিওয়ার্ড এর সাথে লং টেইল কিওয়ার্ড এড করুনঃ
ধরুন আপনার মেইন কিওয়ার্ড টি হচ্ছে “ব্লগিং”। এখন এটির সাথে আপনি এমন কিছু ওয়ার্ড এড করুন যাতে আপনার কম্পিটিটর কমে যায়। আপনি লং টেইল এ নাম্বার এড করে দিতে পারেন। এতে এটি ইউনিক হয়। যেমনঃ ব্লগিং ক্যারিয়ারে সফলতা পাওয়ার জরুরি ৭ টি টিপস। এটি অবশ্যই একটি সুন্দর লং টেইল কিওয়ার্ড এর উদাহরণ। এটি গুগলে অনেক সহজে র্যাংক করানো যায়।
পরিশেষেঃ
আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইট এর অন পেজ কিংবা অফ পেজ এস.ই.ও সুন্দর ভাবে করিয়ে নিতে চান তাহলে আজই আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
আমার ফেসবুক পেজ : https://www.facebook.com/sabbirwdx0/
আমাদের ফেসবুক গ্রুপ : https://www.facebook.com/groups/freelanceguidelines/
আমাদের সার্ভিস: https://freelancersabbir.com/services/